প্রমথ চৌধুরী : বাংলা সাহিত্যের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র
প্রমথ চৌধুরী (১৮৬৮-১৯৪৬) বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ প্রাবন্ধিক, সাহিত্য সমালোচক, কবি, ছোটগল্পকার ও ব্যঙ্গ লেখক। তিনি বাংলা সাহিত্যে চলিত গদ্যরীতির প্রবর্তক। তাঁর সাহিত্য রচনার সুনিপুণতা, সৃষ্টিশীলতা, গাম্ভীর্য, যুক্তিনিষ্ঠা সাহিত্যের ভান্ডারকে সমৃদ্ধ করেছে।
প্রমথ চৌধুরী ১৮৬৮ সালের ৭ আগস্ট যশোরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি কলকাতার হেয়ার স্কুল থেকে এন্ট্রান্স, প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে দর্শনে প্রথম শ্রেণিতে বিএ পাস এবং ইংরেজিতে প্রথম শ্রেণিতে এমএ পাস করেন। ১৮৯৩ সালে ইংল্যান্ডে গিয়ে সেখান থেকে বার অ্যাট ল ডিগ্রি অর্জন করেন।
প্রমথ চৌধুরী ছিলেন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী। তিনি প্রবন্ধ রচনা ও সাহিত্য সমালোচনার পাশাপাশি কবিতা, গল্প, চুটকি রচনায় খুব পারদর্শী ছিলেন। ব্যঙ্গাত্মক রচনাতেও তাঁর জুড়ি নেই। তাঁর কবিতাগুলো ছিল খুবই বাস্তববাদী। ছোটগল্পগুলো ছিল অসাধারণ। তিনি মূলত সাধারণ পাঠকদের কথা মাথায় রেখে সাহিত্য রচনা করতেন।
প্রমথ চৌধুরী ছিলেন বাংলা সাহিত্যের একজন অগ্রগামী ব্যক্তিত্ব। তিনি বাংলা সাহিত্যের গতিপথ ঘুরিয়ে দিয়ে নতুনত্ব এনেছিলেন। তাঁর সাহিত্য রচনার সুনিপুণতা, সৃষ্টিশীলতা, গাম্ভীর্য, যুক্তিনিষ্ঠা বাংলা সাহিত্যের অমূল্য সম্পদ।
প্রমথ চৌধুরীর জীবনী
প্রমথ চৌধুরী (১৮৬৮-১৯৪৬) ছিলেন বাংলা সাহিত্যের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। তিনি ছিলেন একজন প্রাবন্ধিক, কবি, ছোটগল্পকার, অনুবাদক এবং সম্পাদক। তিনি বাংলা গদ্যে চলিত রীতির প্রবর্তক হিসাবে বিখ্যাত।
প্রমথ চৌধুরী ১৮৬৮ সালের ৭ আগস্ট যশোরে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম দুর্গাদাস চৌধুরী এবং মাতার নাম মগ্নময়ী দেবী। তিনি কলকাতার হেয়ার স্কুল থেকে এন্ট্রান্স, প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে দর্শনে অনার্সসহ বিএ এবং ইংরেজিতে এমএ পাস করেন। ১৮৯৩ সালে তিনি বিলেত যান এবং ব্যারিস্টারি পাস করেন। ১৮৯৯ সালে তিনি সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের কন্যা ইন্দিরা দেবীকে বিয়ে করেন।
প্রমথ চৌধুরী সাহিত্যিক ছদ্মনাম কি
প্রমথ চৌধুরীর সাহিত্যিক ছদ্মনাম ছিল “বীরবল”। তিনি এই ছদ্মনামে তার বেশিরভাগ প্রবন্ধ ও রচনা লিখেছিলেন।
প্রমথ চৌধুরী সম্পাদিত পত্রিকার নাম কি
প্রমথ চৌধুরী ১৯১৪ সালে “সবুজপত্র” নামে একটি সাহিত্য পত্রিকা সম্পাদনা শুরু করেন। এই পত্রিকাটি বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে।
বই পড়া নিয়ে প্রমথ চৌধুরীর উক্তি
প্রমথ চৌধুরী বই পড়ার গুরুত্ব সম্পর্কে বলেছেন, “বই পড়ার মতো আর কোনো শখ নেই। বই পড়ার মধ্যেই জীবনের সমস্ত আনন্দ নিহিত।”
প্রমথ চৌধুরীর প্রথম প্রবন্ধ
প্রবন্ধ সাহিত্যের জন্য প্রমথ চৌধুরী বেশি বিখ্যাত। তার প্রথম প্রবন্ধ ‘জয়দেব’ প্রকাশিত হয় সাধনা পত্রিকায় ১৮৯৩ সালে। প্রমথ চৌধুরীর সাহিত্যিক ছদ্মনাম ছিল ‘বীরবল’।
প্রমথ চৌধুরীর রচনাসমগ্র
প্রবন্ধ গ্রন্থ
- তেল-নুন-লকড়ী (১৯০৬)
- বীরবলের হালখাতা (১৯১৬)
- নানাকথা (১৯১৯)
- ভাষার কথা
- আমাদের শিক্ষা (১৯২০)
- রায়তের কথা (১৯১৯)
- নানাচর্চা (১৯৩২)
- প্রবন্ধ সংগ্রহ (১৯৫২ ১ম খণ্ড ও ১৯৫৩ ২য় খণ্ড)
গল্পগ্রন্থ
- চার-ইয়ারী কথা (১৯১৬)
- আহুতি (১৯১৯)
- নীললোহিত (১৯৪১)
- অনুকথা সপ্তক
- ঘোষালে ত্রিকথা
কাব্যগ্রন্থ
- সনেট পঞ্চাশৎ (১৯১৩)
- পদচারণ (১৯১৯)
মৃত্যু
প্রমথ চৌধুরী ২ সেপ্টেম্বর ১৯৪৬ তারিখ ব্রিটিশ ভারতের কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন।
উপসংহার
প্রমথ চৌধুরী ছিলেন বাংলা সাহিত্যের এক অনন্য প্রতিভা। তার সাহিত্যকর্ম বাংলা সাহিত্যে এক নতুন দিগন্তের সূচনা করে। তার সাহিত্যকর্ম বাংলা সাহিত্যের অমূল্য সম্পদ।